অবরোধের মধ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাসে পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যার ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়াসহ ২৮ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
এ মামলায় পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা বুধবার পরোয়ানা জারির এই আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী তাপস কুমার পাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল কি না- তা পুলিশকে ২৭ এপ্রিল জানাতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গুলশানে নিজের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে গতবছর ৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়া লাগাতার অবরোধ ডাকার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ শুরু হয়।
এর মধ্যে ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাঠের পুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের একটি বাসে পেট্রোল বোমা ছোড়া হলে অগ্নিদগ্ধ ও আহত হন ৩০ জন। এর মধ্যে নূর আলম নামে এক ঠিকাদার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকার পেচান গ্রামের বাসিন্দা দুই সন্তানের জনক নূর আলম ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। তার দেহের ৪৮ শতাংশ পুড়েছিল।
এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানার এসআই কে এম নুরুজ্জামান দুটি মামলা করেন, যাতে অবরোধ আহ্বানকারী বিএনপি চেয়ারপারসনকে করা হয় হুকুমের আসামি।
এর মধ্যে এক মামলায় আনা হয় হত্যার অভিযোগ, অন্যটি করা হয় বিশেষ ক্ষমতা আইনে।
তদন্ত শেষে গোয়েন্দা পুলিশ গত বছরের ৬ মে হত্যা মামলায় এবং ১৯ মে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।
এরপর চলতি বছর ২৮ জানুয়ারি বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলাটিও বিচারের জন্য ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।
খালেদা জিয়া ছাড়া এ মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন ভারতে আটক বিএনপির নেতা সালাহ উদ্দিন আহমদ, যাত্রাবাড়ীর সাবেক সাংসদ সালাউদ্দিন আহমেদ, তার ছেলে তানভীর আহমেদ, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতা শওকত মাহমুদ, বিএনপি সমর্থক শিক্ষক নেতা সেলিম ভূঁইয়া, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার নবীউল্লাহ নবী, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুল বারী হেলাল, ছাত্রবিষয়ক সহসম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক শরফত উল্লাহ, ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার, যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নেওয়াজ আলী নেওয়াজ।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ দুই মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ দাবি করে নিন্দা জানিয়ে আসছে বিএনপি।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও পাঁচটি মামলা বিচারাধীন। এগুলো হচ্ছে- গ্যাটকো, নাইকো, বড়পুকুরিয়া, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা।